নিখোঁজের ১২ দিন পর ডোবায় মিলল যুবকের মরদেহ

নিখোঁজের ১২ দিন পর ডোবায় মিলল যুবকের মরদেহ

শেয়ার করুন

shariatpur-map শরীয়তপুরশরীয়তপুর প্রতিনিধি:

রুবেল সরদার (২৫) নামে এক যুবক গত ৪ ডিসেম্বর নিখোজ হয়। ১২ দিন পর শুক্রবার সকালে একটি ডোবার কচুরিপনার নীচ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেন পুলিশ। সে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার মানিক নগর শিমুলতলা গ্রামের মৃত মালেক সরদারের ছেলে। পরিবারের অভিযোগ একই গ্রামের মনির পাঠান ফোন করে তাকে ডেকে নিয়ে যায়। তারা তাকে হত্যা করে লাশ ডোবায় কচুরিপনায় চাপা দেয়।

জাজিরা থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জাজিরা উপজেলার মানিক নগর শিমুলতলা গ্রামের মৃত মালেক সরদারের ছেলে রুবেল সরদার নির্মান শ্রমিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। গত ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় একই গ্রামের মনির পাঠান মুঠোফোনে ফোন করে রুবেলকে ডেকে নিয়ে যায়। এর পর আর রুবেলের কোন খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। পরের দিন পরিবারের পক্ষ থেকে জাজিরা থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করা হয়। পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে না পারায় ৮ ডিসেম্বর রুবেলের বড় বোন তাছলিমা আক্তার জাজিরা থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলায় মনির পাঠান, তার বাবা মোহাম্মদ আলী পাঠানসহ ১৩ ব্যক্তিকে আসামী করা হয়।

শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে জাজিরা উপজেলার মল্লিক কান্দি গ্রামের ফসলি জমির মাঠের একটি ডোবায় কচুরিপনা পরিস্কার করেত যায় শ্রমিকরা। সেখানে কচুরিপনার নীচে একটি মৃতদেহ দেখে থানায় খবর দেয়া হয়। পুলিশ এসে বেলা ১২টার দিকে লাশটি উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। রুবেলের বাড়ি থেকে মল্লিক কান্দি গ্রামটি দুই কিলোমিটার দুরে অবস্থিত।

রুবেলের বোন তাছলিমা আক্তার বলেন, পাঠান পরিবারের সাথে সম্পত্তি নিয়ে আমাদের সাথে দীর্ঘ দিন থেকে বিরোধ চলছে। ২০ বছর আগে তারা আমার আরেক ভাইকে হত্যা করেছে। আমার ছোট ভাই রুবেলকে হত্যা করার উদ্দ্যেশে ১২ দিন আগে অপহরণ করে। আমরা জিডি ও মামলা করেছিলাম। তারপরও পুলিশ আমার ভাইকে জীবিত উদ্ধার করতে পারলনা। পাষন্ডরা আমার ভাইকে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে হত্যা করেছে। আমি খুনিদের ফাঁসি চাই।

রুবেলের স্ত্রী রোকসানা আক্তার বলেন, ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় কাজ থেকে ফিরে আমার স্বামী খেতে  বসেছিল। এমন সময় মনির পাঠানের ফোন আসে। ফোন পেয়ে সে বের হয়ে যায়। আমরা তাকে খুঁজে পেলাম না। পুলিশও তাকে খুঁজে দিতে পারল না। আমার স্বামীকে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এখন আমি দুই শিশু সন্তান নিয়ে কোথায় দাড়াব? কে আমাদের পরিবারের দায়িত্ব নেবে?

রুবেল নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার পর থেকে মনির পাঠান ও তার পরিবারের সদস্যরা বাড়ি থেকে আত্মগোপনে চলে গেছে।

জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, রুবেল নামে এক যুবক নিখোঁজের ঘটনায় সাধারন ডায়েরী ও মামলা হয়েছিল। আমরা তাকে জীবিত খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। তার মৃতদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।