কালিয়াকৈরে ঝুঁকিপূর্ণ বেইলী ব্রিজে যানবাহন পারাপার হয় ফোন কলে

কালিয়াকৈরে ঝুঁকিপূর্ণ বেইলী ব্রিজে যানবাহন পারাপার হয় ফোন কলে

শেয়ার করুন

।। সালাহ উদ্দিন সৈকত, কালিয়াকৈর, গাজীপুর।।

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় চাপাইর এলাকায় তুরাগ নদীর উপর নির্মিত বেইলী ব্রিজ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে মানুষ ও ভারী যানবাহন। যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।

ধামরাই-মাওনা আঞ্চলিক সড়কের অত্যন্ত ব্যস্ততম এই চাপাইর সেতু।ব্রিজটির ধারণ ক্ষমতা পাঁচ টন থাকলেও হরহামেশাই ওই ব্রিজ দিয়ে ১৫ থেকে ২০ টন পর্যন্ত মালবাহী যানবাহন চলাচল করেছে।ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটির উপর দিয়ে অধিক ওজনের ট্রাক, বাস ও অন্যান্য যানবাহন পারাপার হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
তাতে ব্রিজটি হুমকির মধ্যে রয়েছে।

ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে প্রায়ই বেইলী ব্রিজের বিভিন্ন অংশের স্ল্যাব ভেঙে যাচ্ছে। যার কারণে যানবাহন ও স্থানীয় লোকজনদের চলাচলে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এদিকে সরু ওই ব্রিজের যানজটের নাজেহাল থেকে রক্ষা পেতে দুই পাশে দু’জন গেটম্যান ফোন কলের মাধ্যমে যানবাহন পারাপারের সিগন্যালের কাজ করছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধামরাই থেকে গাজীপুরের মাওনা পর্যন্ত সড়কটি নতুন করে সংস্কার করেছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। দীর্ঘ এ সড়কে নদী ও খাল গুলোতে পুরাতন ব্রিজগুলোর পরিবর্তে নতুন করে আধুনিক ব্রিজ নির্মাণ কাজও সম্পন্ন করেছে সওজ। তবে উপজেলার চাপাইর এলাকায় তুরাগ নদীর উপর পুরাতন সরু বেইলী ব্রিজটি ভোগান্তি বাড়িয়ে তুলেছে পুরো সড়কের।

মাওনা চৌরাস্তা, ফুলবাড়িয়া, চাঁপাইর, মির্জাপুরের আজ গানা,ধামরাই সহ আশেপাশের কয়েকটি এলাকার যোগাযোগের প্রধান সড়ক হওয়ায় এ সড়কে প্রচুর যানবাহণের চলাচল। তবে এই একটি মাত্র স্থানেই দিনের পর দিন যানজটে পড়ে থাকতে হচ্ছে। যানজটের ভোগান্তি কমাতে ব্রিজের দুই পাশে দু’জন গেটম্যান রেখেছে উপজেলা প্রশাসন। দু’পাশে থেকে ফোন কলের মাধ্যমে যানবাহন পারাপারের সিগন্যাল প্রদান করা হচ্ছে। তবুও যেন দুর্ভোগের শেষ হচ্ছেনা।বিকল্প কোনো যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে প্রতিদিন এই সেতু দিয়েই চলছে যানবাহন। চলাচল করছে হাজারো সাধারণ যাত্রী ও শিক্ষার্থীরা।

এলাকাবাসী জানায়, মাঝেমধ্যে জোড়াতালি দিয়ে সেতুটি সংস্কার করলেও কিছুদিন পর আবার যেই-সেই অবস্থা। অপর দিকে সেতুটি অতি সরু হওয়ায় একই সঙ্গে দুটি যানবাহন পারাপার হতে পারে না। এ কারণে যানবাহন পারাপারের সময় উভয় প্রান্তে জানজটের সৃষ্টি হয়।

অ্যাম্বুলেন্স চালক সুরুজ জানান, গুরুতর অবস্থায় রোগীদেরকে নিয়ে বেশিরভাগ সময়ই ব্রিজের যানজটে অপেক্ষা করতে হয়। যা রোগীর স্বজনদের জন্য খুবই কষ্টের বিষয়।

বাসের চালক সোলায়মান হোসেন জানান, বেইলী ব্রিজটি দিনদিন চরম ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ব্রিজের মাঝখানে বিভিন্ন জায়গায় মাঝেমধ্যেই ভেঙ্গে যায়।ভাঙা অংশ মেরামত করা হলেও ঝুঁকি থেকেই যায়।

সিএনজি চালক মানিক জানান, যাত্রীসহ গাড়ি নিয়ে যখন ব্রিজে উঠি তখন অনেক ভয়ে থাকি কখন জানি দুর্ঘটনা ঘটে যায়। সরকারের কাছে একটাই দাবি খুব তাড়াতাড়ি করে নতুন ব্রিজ যাতে কইরা দেয়।

জানা যায়, পুরাতন এই বেইলী ব্রিজের পাশ দিয়ে গত একবছর আগে চাপাইর সেতু নির্মাণ কাজ চালু করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। তবে ব্রিজের পিলারের তলদেশের কাজ শেষ হলেও বর্তমানে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে সেতুটির কাজ চলছে।এলাকাবাসীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি, সেতু নির্মাণের কাজ দ্রুত করা হোক।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ রাশেদ হাসান জানান, তুরাগ নদীর উপর বেইলী ব্রিজটিতে ত্রুটি দেখা মাত্রই মেরামত করে দেয়া হয়। তবে অধিক ধারণক্ষমতার পরিবহণ চলাচলের কারণে ব্রিজটিতে বিভিন্ন সময় সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া চাপাইর সেতুর কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। প্রকল্পের মেয়াদের সময়সীমার মধ্যেই কাজ শেষ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তৎপর রয়েছে। আশা করি আগামী বছরেরএপ্রিলের মধ্যে ব্রিজটি দৃশ্যমান এবং ডিসেম্বরের মধ্যেই ব্রিজটি উদ্বোধন করা যাবে ।