পদ্মার হঠাৎ ভাঙ্গনে আতংকিত নদীতীরের মানুষ

পদ্মার হঠাৎ ভাঙ্গনে আতংকিত নদীতীরের মানুষ

শেয়ার করুন

faridpur vangon pic

।। কামরুজ্জামান সোহেল,ফরিদপুর ।।
হঠাৎ করেই ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে ফরিদপুরের সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের পদ্মা নদীতে। হঠাৎ করে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারন করায় হুমকির মুখে পড়েছে জেলার একমাত্র নৌবন্দরটি। ইতোমধ্যেই নদীতে বিলিন হয়েছে নদী সংরক্ষন তীরের ৮০ ফুট অংশের সিসি ব্লক।

গত দুইদিনের ভাঙ্গনে কয়েকটি বসত বাড়ী ও ফসলী জমি চলে গেছে নদীগর্ভে। ভাঙ্গনের কারনে দিশাহারা হয়ে নির্ঘুম রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছে পদ্মাতীরবর্তী এলাকার হাজারো মানুষ। ভাঙ্গন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তরফ থেকে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও ঠেকানো যাচ্ছেনা নদী ভাঙ্গন। নদী ভাঙ্গনের ব্যাপকতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষোভ বেড়েছে নদীপাড়ের মানুষের। বিভিন্ন সময় নদীপাড়ের মানুষ ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী সমাধানের জন্য কতৃপক্ষের কাছে আবেদন জানালেও কাজের কাজ হয়নি। বর্ষা মৌসুম এলেই বাড়ে নদী ভাঙ্গন। আর এ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে উদ্বেগ উৎকন্ঠায় দিন কাটান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণ। ডিক্রিরচর ইউনিয়নের কয়েকজন অধিবাসী জানান, বন্যার পানি কমার পর হঠাৎ করেই গত সোমবার রাতে আইজুদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী ও তাইজুদ্দিন মুন্সীর ডাঙ্গীতে ভাঙ্গন শুরু হয়। হঠাৎ করে ভাঙ্গন শুরু হওয়ায় আতংকিত হয়ে পড়েন অনেকে। রাতের বেলার তীব্র ভাঙ্গনে মুহুর্তের মধ্যেই নদীগর্ভে চলে যায় নদী তীর সংরক্ষন বাঁধের বড় একটি অংশ। এরপর কয়েকটি বসত বাড়ী ও ফসলী জমিও চলে যায় নদীগর্ভে।

হঠাৎ নদী ভাঙ্গনের কারনে গোটা এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয় চরম আতংক। স্থানীয়রা জানান, বাড়ী ঘর হারিয়ে কয়েকটি পরিবার এখন অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। এখনো ভাঙ্গন চললেও তীব্রতা কমে এসেছে। তবে, ফের ভাঙ্গনের তীব্রতা বাড়তে পারে। নদী ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থার জন্য মাঝে মধ্যেই স্থানীয়রা কতৃপক্ষের কাছে ধর্না দিলেও তারা কেবলই আশ^াস দিয়ে যাচ্ছেন।

তাইজুদ্দিন মুন্সী ডাঙ্গীর বাসিন্দা সালাম মাতুব্বর, আয়নাল শেখ, কবির বেপারী জানান, প্রতি বছর নদী ভাঙ্গনে গ্রামের পর গ্রাম বিলিন হলেও দেখার কেউ নেই। যখন নদী ভাঙ্গন শুরু হয় তখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন আসেন। তারা শুধু আশ্বাসই দেন, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। তাদের অভিযোগ, শুকনো মৌসুমে একটি প্রভাবশালী মহল ড্রেজার লাগিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করে। ফলে বর্ষা মৌসুম শুরু হলেই ভাঙ্গন দেখা দেয়।
ডিক্রিরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টু জানান, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলেই নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারন করে। ভাঙ্গনের কারনে এ এলাকার অনেক পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে একেবারেই নিঃস্ব হয়ে গেছে। হঠাৎ করে ভাঙ্গনের কারনে হুমকির মুখে পড়েছে সিএন্ডবি ঘাট নৌবন্দরটি। নদী ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী সমাধান দরকার বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে, নদী ভাঙ্গন শুরু হবার পর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তরফ থেকে ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় বালির বস্তা ফেলা হলেও তা কোন কাজেই আসছেনা বলে জানান স্থানীয়রা।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, ভাঙ্গন প্রতিরোধে দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ভাঙ্গনরোধে যা করা দরকার তাই করা হবে।