চন্দ্রা-ডাইনকিনি-রসূলপুর সড়কের বেহাল দশা

চন্দ্রা-ডাইনকিনি-রসূলপুর সড়কের বেহাল দশা

শেয়ার করুন

received_582565146115696

।। সালাহ উদ্দিন সৈকত, কালিয়াকৈর, গাজীপুর।।

গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের চন্দ্রা থেকে রসুলপুর রাস্তাটি বেহাল দশায় পতিত হয়েছে। এই রাস্তাটি চন্দ্রা এলাকার সাথে আশেপাশে এলাকার মানুষের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের সংযোগ সড়ক বলে জানা যায়।  রাস্তাটির বেহাল দশার কারণে আশেপাশে কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে। মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হচ্ছে পথচারীদের। ফলে রাস্তাটিতে সাধারণ মানুষের পায়ে হেঁটে চলাচল করাই দুষ্কর হয়ে পড়েছে। যানবাহন চলাচলে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। এলাকার মানুষ এরকম অভিশাপ থেকে মুক্তি চায়

সরেজমিনে ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়,চান্দরা থেকে রসুলপুর আঞ্চলিক সড়কের চন্দ্রা নায়াগ্রা ঢাল থেকে ডাইনকিনি ঈদগাঁও মাঠ পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার পিচঢালা রাস্তার বেশিরভাগ রাস্তায় খানাখন্দে ভরা। তার কারণে ওই এলাকার আশেপাশের কয়েক গ্রামের হাজার হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। হঠাৎ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে কিংবা জরুরি মুহূর্তে এ্যাম্বুলেন্স অথবা অন্য কোনো পরিবহন এই খানাখন্দ রাস্তার কারণে প্রবেশ করতে খুবই কষ্টের সম্মুখীন হচ্ছেন। যে কারণে এলাকার সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা দিতে খুবই অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

শিল্প অঞ্চল হওয়ার কারণে বেশিরভাগ শিল্প কারখানার শ্রমিকরা অফিসে যাতায়াতের ক্ষেত্রে খুবই অসুবিধার শিকার হচ্ছে। অনেক সময় পরিবহন উল্টে যায়। এই রাস্তাটি সংস্কার করা হলে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা এলাকায় সাথে একটি যোগাযোগের মাধ্যম হবে। এতে করে আশেপাশের গ্রামের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য সহজেই চন্দ্রা হাটে যেয়ে বিক্রি করতে পারবেন। তাতে করে সাধারন মানুষের অর্থনীতির চাকা ঘুরবে। ওই এলাকার সাথে উপজেলা শহর সহ অন্যান্য এলাকায় তাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে ।অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে।
রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ার কারণে বিভিন্ন খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। বারবার জনপ্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ করেও তেমন কোনো লাভ হয়নি তারা শুধু বারবার আশ্বাস দিয়েছেন যে বর্ষা শেষ হলে কাজ হবে।

ডাইনকিনি এলাকার রোজ গার্ডেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহিদ হাসান জানান,এই রাস্তায় প্রতিনিয়ত কয়েকশ নছিমন, করিমনসহ থ্রি-হুইলার মাহেন্দ্র ও ইঞ্জিনচালিত ভ্যান চলাচল করে থাকে। নায়াগ্রা টেক্সটাইল, ড্রেসম্যান গার্মেন্টস, ওয়ালটন হাইটেক, মাহমুদ জিন্স, নুর গ্রুপ, সমাহার ফ্যাশন, বাংলাদেশ থাই এ্যালোমিনিয়াম,ফার্মা এইডস লিঃ,এর বেশিরভাগ শ্রমিক, কর্মচারীবৃন্দ এই রাস্তার আশেপাশে এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে যাতায়াত করেন। প্রতিনিয়ত অফিস করতে যে তাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। খানাখন্দ ও বেহাল দশার কারণে স্কুল খুলে দেয়ার পর থেকেই ছাত্র-ছাত্রীদের আসতে অনেক সুবিধা হচ্ছে। যার কারণে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি অনেক কমে গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ব্যাংকার আব্দুল্লাহ আল মামুন টিপু বলেন এই রাস্তা দিয়ে প্রতিনিয়ত ভাতারিয়া,ডাইনকিনি,হরতকীতলা,বিষাইদ,খোলারটেকী, রসুলপুর,বরিয়াবহ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। কিন্তু প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তার এই বেহাল দশায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত এই ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে যাত্রীরা।

মাহিন্দ্র চালক লিটন জানান,রাস্তাটির পিচ উঠে বড় বড় খানা-খন্দে রূপ নিয়েছে। ইঞ্জিনচালিত বাহনগুলি প্রায় দুর্ঘটনায় পতিত হয়। এই রাস্তা সংস্কার করা না হলে গাড়ি চালানো বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে প্রায় দুইশ’ থ্রি-হুইলার চালক বেকার হয়ে পড়বে।

অটোরিকশার যাত্রী রকিবুল হাসান বলেন, প্রতিদিনের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। রাস্তাটির দ্রুত সংস্কার হওয়া দরকার।

ডাইনকিনি এলাকার জব্বার হোসেন বলেন,কিছুদিন আগে দুর্ঘটনার কবলে পরে হাত-পা ভেঙ্গে হাসপাতালে অবস্থান করছে এই এলাকার একজন গার্মেন্টস কর্মী। এছাড়া মাঝেমধ্যেই মাছের ট্রাকসহ ভারী যানবাহন প্রবেশ করায় রাস্তাটির পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।

ডাইনকিনি এলাকার ৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বেলায়েত হোসেন জানান, রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে জনসাধারণের চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়বে। তাই,রাস্তাটি সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। আশা করি কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নিবে।

এই ব্যাপারে কালিয়াকৈর উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বিপ্লব পাল বলেন,ওই আঞ্চলিক সড়ক সংস্কারের জন্য টেন্ডার জমা পড়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেয়া হয়নি। বর্ষা শেষ হলেই খুব দ্রুতই বরাদ্দকৃত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ওই রাস্তা সংস্কারের কাজ করা হবে।