গৃহবধূর লাশ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে গেল শশুর বাড়ির লোকজন

গৃহবধূর লাশ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে গেল শশুর বাড়ির লোকজন

শেয়ার করুন

রোকনুজ্জামান পারভেজ, শরীয়তপুর প্রতিনিধি:

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে এক নারীর লাশ রেখে তার শশুর বাড়ির সদস্যদের পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই নারী ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরকোরালতলী গ্রামের মজিবর দেওয়ান ওরফে গোলাম মাওলার স্ত্রী সান্তা আক্তার (২৮)। সোমবার বিকাল চারটার দিকে লাশটি রেখে শশুর বাড়ির সদস্যরা পালিয়ে যায়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরনের কারনে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসক।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্র জানায়,ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরকোরালতলী গ্রামের মজিবর দেওয়ানের স্ত্রী সান্তা আক্তারকে দুপুরে বাম হাতসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম অবস্থা ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা ওই নারীর রক্তক্ষরন বন্ধ করতে পারছিলেন না। তার অবস্থা সংকটপন্ন হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।

বিকাল চারটার দিকে ওই নারীর ভাশুর লাল মিয়া দেওয়ান তাকে শরীয়তপুর সরদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এর কিছুক্ষন পরই ওই নারীর শশুর বাড়ির সদস্যরা হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে সান্তার বাবার বাড়ির সদস্যরা সন্ধায় শরীযতপুর সদর হাসপাতালে ছুটে আসেন।

একই উপজেলার নারায়নপুর পুটিয়া গ্রামের লাল মিয়া তালুকদারের মেয়ে সান্তা আক্তার। ১০ বছর আগে মজিবর দেওয়ানের সাথে তার বিয়ে হয়। আবির নামে তাদের পাঁচ বছর বয়সি একটি ছেলে রয়েছে। মজিবর দেওয়ান সৌদি আরব প্রবাসি ছিলেন। এক বছর যাবৎ দেশে এসে একটি গরুর খামারের ব্যবসা শুরু করেছেন।

সান্তার মা ঝিলু বেগম বলেন,বিকাল সাড়ে চারটার দিকে সান্তার স্বামী মুঠোফোনে তার মৃত্যুর খবর জানায়। সে জানায় হৃদ রোগে আকান্ত হয়ে সান্তা মারা গেছে। তার লাশ শরীয়তপুর হাসপাতালে আছে। আমরা ছুটে এসে দেখি আমার মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

সান্তার বাবা লাল মিয়া তালুকদার বলেন,সান্তা মারা যাওয়ার পর আমাদের খবর দেয়া হয়েছে। তার শশুর বাড়ি থেকে আমার বাড়ির দুরত্ব মাত্র দুই কিলোমিটার। তাকে হত্যা করা হয়েছে। কেন তাকে হত্যা করা হল তা আমরা এই মুহুর্তে বলতে পারছি না।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মেঘনাথ সাহা বলেন,সান্তা নামে এক নারীর শরীরের বিভিন্নস্থানে ক্ষত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তার ক্ষতস্থান থেকে প্রচুর রক্ত ঝরছিল। রক্ত বন্ধ করতে না পেরে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। শরীয়তপুর পর্যন্ত নেয়া হলে সে মারা যায়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরনের কারনে তার মৃত্যু হয়েছে।

ভেদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.মেহেদি হাসান বলেন,এক গৃহবধূর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। বিষয়টি বিস্তারিত জানার জন্য ওই গ্রামে গিয়েছি। কি কারনে মেয়েটির মৃত্যু হল তা তদন্ত হচ্ছে।