রেল স্টাফদের ধর্মঘট, সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ

রেল স্টাফদের ধর্মঘট, সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ

শেয়ার করুন

Komlapur

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

পূর্ব নির্ধারিত মাইলেজ বা বেতন-ভাতা বাতিল করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে রেলওয়ে রানিং স্টাফ কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।

বুধবার (১৩ এপ্রিল) ভোর ৬টা থেকে তারা সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।

জানা গেছে, রেলের চাকা সচল রাখতে একজন চালককে দিনে গড়ে ১৪ থেকে ১৮ ঘণ্টা ট্রেন চালাতে হয়। এজন্য তাদের বাড়তি মজুরি ও পেনশনে ৭৫ শতাংশ টাকা দেওয়া হয়। বেতনের বাইরেও যত মাইল দায়িত্ব পালন করেন এবং অতিরিক্ত সময় কাজ করেন, তার জন্য নির্দিষ্ট হারে ভাতা পেয়ে থাকেন তারা। এটা রেলে ‘মাইলেজ ভাতা’ হিসেবে পরিচিত।

সম্প্রতি রেলের অতিরিক্ত এ সুযোগ-সুবিধা কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে ক্ষুব্ধ হন রেল চালকরা। এর আগে আট ঘণ্টার বেশি কাজ না করার ঘোষণাও দেন। এ কারণে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের আশঙ্কাও দেখা দেয়।

রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, সার্বক্ষণিক হিসেবে আখ্যায়িত করে ব্রিটিশ আমল থেকে চলন্ত ট্রেনে দায়িত্ব পালন করা চালক, গার্ড ও টিকিট চেকারদের বিশেষ আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়। অতিরিক্ত সময়ে প্রতি ১০০ কিলোমিটার ট্রেন চালালে দেওয়া হয় মূল বেতনের একদিনের সমপরিমাণ টাকা। পেনশনের সঙ্গে দেওয়া হয় বাড়তি ৭৫ শতাংশ টাকা।

এসব চালক ও গার্ডদের বেতন-ভাতা দেওয়া হতো রেলওয়ের স্বতন্ত্র কাঠামোয়। কিন্তু গত বছরের ৩ ডিসেম্বর সফটওয়্যার ‘আইবাস প্লাস প্লাস’র মাধ্যমে রেলের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে রেলওয়ের পরিবহন বিভাগের (রানিং স্টাফ) আগের সেই ‘মাইলেজ’ সুবিধা থাকছে না।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওই সিদ্ধান্ত জানার পর মাইলেজ সুবিধা চালুর দাবিতে নিয়মিত বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সভা করেন চালক, গার্ড (ট্রেন পরিচালক) ও টিকিট চেকারেরা। তারা রেলমন্ত্রী, রেলওয়ের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি একাধিক সভাও করেন।

কিন্তু গত ১০ এপ্রিল এ সংক্রান্ত চিঠি পাওয়ার পর রেলওয়ের রানিং স্টাফরা আজ এ ধর্মঘটে গিয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

চিঠিতে বলা হয়, বেসামরিক পেনশন ও আনুতোষিক হিসাবের ক্ষেত্রে মূল বেতনের সাথে কোনো ভাতা যোগ করে হিসাব করার সুযোগ নেই।

তাই রেলওয়ের রানিং স্টাফদের মূল বেতনের সাথে চলমান ভাতা যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা প্রদানের প্রস্তাবে নির্দেশক্রমে পুনরায় অর্থ বিভাগের অসম্মতি জ্ঞাপন করা হলো।