প্রাণের উৎসবকে ঘিরে খাদি পোশাকে ঝুঁকছে ক্রেতারা

প্রাণের উৎসবকে ঘিরে খাদি পোশাকে ঝুঁকছে ক্রেতারা

শেয়ার করুন

poila boishak pic 3
কুমিল্লা প্রতিনিধি :

বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখকে সামনে রেখে নগরীর অভিজাত বিতানগুলোতে যেমন ক্রেতাদের উপচেপড়া -ভিড়, তেমনি কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী খাদি কাপড়ের দোকানগুলোও বেচা-বিক্রিতে পিছিয়ে নেই কোন অংশে। এছাড়াও কুমিল্লার ছোট-বড় মার্কেটের দোকান ও ফ্যাশন হাউজে শোভা পাচ্ছে নববর্ষের বিশেষ পোশাক। নববর্ষের আর মাত্র তিনদিন বাকী। পয়লা বৈশাখের ওই দিনটিকে মনের রঙে সাজিয়ে তুলতে শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী নারী ও পুরুষ বৈশাখী কেনাকাটায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন দোকানে দোকানে।

সরেজমিনে গিয়ে কুমিল্লা মহানগরীর রাজগঞ্জ ও লাকসাম রোডের বিভিন্ন খাদি দোকানে দেখা গেছে বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখকে ঘিরে নগরীর অভিজাত বিতানগুলো, ছোট-বড় মার্কেটের দোকান ও ফ্যাশন হাউজসহ কুমিল্লা ঐতিহ্যের ধারক খাদি দোকানে বিকিকিনি জমে উঠেছে। খাদি কাপড়ের বাহারী ডিজাইনের পাঞ্জাবি, ফতুয়া, হাফশার্ট, থ্রিপিস, ফ্রগ, বাচ্চাদের ফতুয়া, ধুতি-পাঞ্জাবি, শাড়ি, বড়দের পাঞ্জাবি-ধুতি, মেয়েদের টপসসহ বিভিন্ন পোশাকের পশরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা।

পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে খাদি কাপড় উপর কয়েকজন ক্রেতার আগ্রহ সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা জানান, খাদি কাপড়ের অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে সম্পূর্ণ নতুনত্বের ছোয়া লেগেছে এবং দামের দিক দিয়ে অত্যন্ত সাশ্রয়ী। তাই তারা এ বছরে খাদি পোশাকের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন। এসব কথা জানান বিভিন্ন দোকানের খাদি বিক্রেতারাও।

poila boishak pic 1তাদের মতে বর্তমানে খাদি শিল্পে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন ডিজাইনের সন্নিবেশিত করা হয়েছে। তাই বর্তমানে খাদির চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

রাজগঞ্জের খাদি ঘরের সত্ত্বাধিকারী প্রদীপ কুমার রাহা বলেন, ঐতিহ্যবাহী শিল্প হিসিবে কুমিল্লার খাদির গুরুত্ব ও চাহিদা কখনো কমবে না, বরং আরো বাড়বে। সময়ের ব্যবধানে এ শিল্পটি দিন দিন মানুষের নিকট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বর্তমানে কুমিল্লার বিভিন্ন মার্কেটে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কমপক্ষে ১৫০টিরও বেশি দোকান। তবে বেচা-বিক্রি হচ্ছে সর্বত্রই। তিনি জানান, এবারের পয়লা বৈশাখে তার দোকানে পাঞ্জাবিসহ হরেক ডিজাইনের খাদি পোশাক বিক্রি হচ্ছে। নগরীর জোসনা স্টোর খাদি বিক্রেতা তপন দা জানান, এবারের পয়লা বৈশাখে সর্ব নিম্ন ৩০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২হাজার টাকা দরে হরেক রকমের খাদি পোশাক বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন ঈদ, পূজা ও পয়লা বৈশাখসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবে খাদি পোশাক ক্রেতাদের চিন্তা চেতনায় স্থান করে নিয়েছে।
এ দিকে লাকসাম রোডের কুমিল্লা খাদি ভান্ডারের সত্ত্বাধিকারী মোঃ আরিফ জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের পয়লা বৈশাখে খাদি কাপড়ের প্রতি মানুষের ঝোঁক বেড়েছে। তাই বিক্রিও হচ্ছে ভাল।

তিনি আরো জানান, প্রত্যেক ক্রেতাই নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী খাদি কাপড় কিনতে পারছেন। তবে অভিজাত ডিজাইনের খাদি কিনতে দামের কথা চিন্তা করছেন না ক্রেতারা। এর মধ্যে পাঞ্জাবি ৪৫০ থেকে ১২০০ টাকা, ফতুয়া ১৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, শার্ট ৩০০ থেকে ৫৫০ টাকা, থ্রিপিস ৪৫০ থেকে ১৫০০ টাকা, ফ্রগ ২০০ থেকে ৪৫০ টাকা, বাচ্চাদের ফতুয়া ২০০ থেকে ৪৫০ টাকা, ধুতি-পাঞ্জাবি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, শাড়ি ৫৫০ থেকে ১০০০ টাকা, বড়দের পাঞ্জাবি ৪৫০ থেকে ১২০০ টাকা মেয়েদের টপস ৩৫০ থেকে ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তিনি আরো জানান, সময়ের চাহিদাকে মাথায় রেখে খাদি শিল্প নতুনত্বের ছোয়া লেগেছে। তাই কুমিল্লা ছাড়িয়ে ঐতিহাসিক এই খাদি এখন সমগ্র বাংলায় ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি বিদেশেও।