তনু হত্যাকান্ড: ৮ মাসের তদন্তে দৃশ্যমান অগ্রগতি শূন্য

তনু হত্যাকান্ড: ৮ মাসের তদন্তে দৃশ্যমান অগ্রগতি শূন্য

শেয়ার করুন

কুমিল্লা প্রতিনিধি:

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকান্ডের ৮ মাস কেটে গেছে।

কিন্তু দীর্ঘ এ সময়ে থানা ও জেলা ডিবি পুলিশের পর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি মামলার তদন্তের দায়িত্ব পালন করলেও এ যাবৎ ঘটনার রহস্য উদঘাটন, ঘাতকদের শনাক্ত করা কিংবা মামলার তদন্তে দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি নেই। এরই মধ্যে এ মামলার দুইজন তদন্ত তদারক কর্মকর্তার বদলী এবং তদন্তকারী কর্মকর্তাকে পরিবর্তন করা হলেও যে স্থবির হয়ে আছে তদন্ত কার্যক্রম।

কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরের একটি জঙ্গল থেকে গত ২- মার্চ রাতে কলেজছাত্রী সোহাগী জানান তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন তনুর বাবা কুমিল্লা ক্যান্টমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতয়ালী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি পুলিশ ও জেলা ডিবি’র পর গত ১ এপ্রিল থেকে তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি, কুমিল্লা।

সিআইডি তনুর জামা-কাপড় থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে ৩ জনের শুক্রানু পাওয়ার কথাও গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল এবং তারা নিশ্চিত হয়েছিল ’হত্যার আগে তনুকে ধর্ষণ করা হয়েছিল এবং প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনটি সঠিক ছিল না’।

তবে কোথায়, কেন এবং কীভাবে তনুকে খুন করা হয়েছে তা নিয়ে সিআইডিসহ সকল মহলে এখনো গুঞ্জন চলছে। সূত্র জানায়, তদন্তের এক পর্যায়ে সিআইডি নিশ্চিত হয়, তনুকে সেনানিবাসের ভেতরেই ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছে। বাইরে কোথাও হত্যার পর লাশ সেনানিবাসের ভেতরে ফেলে যাওয়ার কোনো সন্দেহাতীত আলামত তারা এখনও খুঁজে পায়নি।

এছাড়া আদালতের আদেশে সিআইডি ডিএনএ প্রতিবেদনটি দ্বিতীয় ময়নাতদন্তকারী মেডিক্যাল বোর্ডকে সরবরাহ করলেও ৩ সদস্যের ওই মেডিক্যাল বোর্ড তনুর মৃত্যুর সঠিক কারণ স্পষ্ট করতে পারেনি। এদিকে এ মামলার দুইজন তদারক কর্মকর্তা সিআইডি-কুমিল্লার বিশেষ পুলিশ ড. নাজমুল করিম খান ও শাহরিয়ার রহমানের বদলীর পর বর্তমানে মামলাটির তদন্ত তদারকী করছেন সিআইডি-কুমিল্লা সুপার ব্যারিস্টার মোশাররফ হোছাইন।

তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, দীর্ঘ ৮টি মাস পার হয়ে গেল, অথচ খুনীদের কেউ এখন পর্যন্ত ধরা পড়ল না। এ পর্যন্ত ঘতকদের ডিএনএ মেলানোর কাজটিও শুরু করতে পারেনি। আমরা চাই তনুর প্রকৃত ঘতকরা ধরা পড়–ক, শাস্তি পাক। মেয়ে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার বা বিচার দেখে যেতে পারবো কিনা জানিনা। তবে আল্লাহ্ আছেন। দুনিয়াতে এ বিচার না পেলেও পরকালে এর মেয়ের হত্যাকারীদের শাস্তি হবেই।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি কুমিল্লার সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, মামলাটির তদন্ত নিজস্ব গতিতে চলছে, তাই তদন্তাধীন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। এ পর্যন্ত কতো জনের ডিএনএ ম্যাচিং করা হয়েছে এ বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।